রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
মিয়ানমারে বিস্ফোরণে মুহুর্মুহু শব্দ, টেকনাফের বসত ঘরের আঙ্গিনায় এসে পড়েছে গুলি মাকে কুপিয়ে হত্যার পর থানা এসে হাজির যুবক টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ

টেকনাফে অপহৃত যুবক তিনদিন পর উদ্ধার, ‘অপহরণের পরিকল্পনাকারি চাচা’সহ গ্রেপ্তার ৩

অপহৃত অপর ২ কৃষক মুক্তিপণে ছাড়া পেয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের বাহারছড়া এলাকায় অপহৃত যুবক বেলাল উদ্দিন (৩২) কে ৩ দিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ‘অপহরণের পরিকল্পনাকারি বেলালের চাচা সহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র ও গুলি।

পুলিশ জানিয়েছে, অপহৃত বেলালের চাচা আমীর আহমদ (৫৫) এই অপহরণের মুল পরিকল্পনাকারি। ভাতিজার জমি স্বল্প মূ্ল্যে ক্রয় করে মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করতেই রোহিঙ্গা ডাকাত শফিকে দিয়ে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অপহৃত বেলাল উদ্দিন (৩২) বাহারছড়া ইউনিয়নের শিলখালি এলাকার আলী আহমদের ছেলে।

গ্রেপ্তাররা হল বেলালের চাচা দক্ষিণ শিলখালি এলাকার মৃত মকবুল আহমদের ছেলে আমীর আহমদ (৫৫), হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী এলাকার মৃত ফকির মিস্ত্রির ছেলে আবচার উদ্দিন প্রকাশ রায়হান (৩৩), একই এলাকার মৃত আবুল হোছাইনের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩৫)।

এদের কাছ থেকে ১টি ওয়ান শুটার গান, ২ রাউন্ড কার্তুজ সহ দেশীয় তৈরী কিরিচ ও দা উদ্ধার করা হয়েছে।

টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, গত ১৩ অক্টোবর দিবাগত রাতে বেলাল অপহরণের সংবাদ পাওয়ার পর থেকে পুলিশ উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। অপহরণের পর মুক্তিপণ বাবদ প্রথমে ৭০ লাখ, পরে ৫০ লাখ এবং ৪০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি সহ নানা সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনায় সম্পৃক্ত ০৩ জন গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয় দেশীয় তৈরী ১টি ওয়ান শুটার গান, ২ রাউন্ড কার্তুজ সহ দেশীয় তৈরী কিরিচ ও দা।

ওসি জানান. প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপহৃত বেলালের চাচা আমীর আহমদ এই ঘটনার পরিকল্পনাকারি হিসেবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গ্রেপ্তাররা স্বীকার করেছে জায়গা সম্পত্তির বিরোধের জের ধরেই রোহিঙ্গা শফি নামের এক ডাকাতের সাথে গত তিন সপ্তাহ আগে আমীর আহমদ এর ভাতিজা বেলালকে অপহরণ করার জন্য চুক্তি করে। অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার পর মুক্তিপণের টাকা আদায়ের জন্য বেলালের পরিবার থেকে তাদের মৌরসি জায়গা সমূহ অল্প মূল্যে চাচারা ক্রয় করে ভাতিজা বেলালকে উদ্ধারের পরিকল্পনা সাজায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বেলাল কক্সবাজার শহর থেকে নিজ গ্রামে সম্পত্তি দেখাশোনা কাজে আসলে অপহরণ করা হয়।

ওসি বলেন, এব্যাপারে ইতিমধ্যে দায়ের হওয়া অপহরণ মামলা মামলা ছাড়াও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ আরও একটি মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলায় ৩ জনকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। একই সঙ্গে ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার সকালে টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকা থেকে অপহৃত ২ কৃষক মুক্তিপণনের টাকা দিয়ে বুধবার রাতে ঘরে ফিরেছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী।

এই ২ জন হলেন, কম্বনিয়াপাড়ার নুরু ইসলামের ছেলে মো. আবছার (২৮), পূর্ব মহেশখালিয়াপাড়ার ফকির মোহাম্মদের ছেলে নুরুল আলম (২৩)।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার কম্বনিয়াপাড়ার পাহাড় সংলগ্ন কৃষি জমিতে কৃষি কাজ করার সময় ২ কৃষককে অপহরণ করা হয়। বুধবার দিবাগত রাতে এই ২ কৃষক ঘরে ফিরে। অপহৃতদের স্বজনরা গোপনে অপহরণকারিদের সাথে যোগাযোগ করে মুক্তিপণের টাকা দিয়ে দুই জন ছাড়া পান বলে স্বজনরা জানালেও বিস্তারিত তথ্য দিচ্ছে না। কত টাকা মুক্তিপণ দিয়েছে, কাকে দিয়েছে তাও পরিষ্কার করছেন না।

তিনি বলেন, মুলত পাহাড়ে অবস্থান নেয়া রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী এবং স্থানীয় অপরাধিরা এতে জড়িত। তাদের ভয়ে এলাকার মানুষ আতংকিত।

টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, দুই জন মুক্তিপণের টাকা দিয়ে চলে আসার বিষয়টি এখনও জানেন না। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভোক্তভোগীদের তথ্য বলছে, এনিয়ে গত একবছরে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৩৫জনের অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ৮০জন স্থানীয় বাসিন্দা, ৫৪জন রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৬৯ জন মুক্তিপণ আদায় করে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888